আমি কসম করছি ক্বিয়ামতের দিনের,
আমি আরো কসম করছি সেই মনের যে (অন্যায় কাজ ক’রে বসলে) নিজেকে ধিক্কার দেয় (যে তোমাদেরকে অবশ্যই আবার জীবিত করে উঠানো হবে)।
মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার হাড়গুলোকে একত্রিত করতে পারব না।
কেন নয়, আমি তার আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত সঠিকভাবে বানিয়ে দিতে সক্ষম
কিন্তু মানুষ তার আগামী দিনগুলোতেও পাপাচার করতে চায়।
সে জিজ্ঞেস করে, ‘ক্বিয়ামত দিবস কবে?’
যখন চোখ ধাঁধিয়ে যাবে,
চাঁদ হয়ে যাবে আলোকহীন
সুরুজ আর চাঁদকে একত্রে জুড়ে দেয়া হবে,
সেদিন মানুষ বলবে- ‘আজ পালানোর জায়গা কোথায়?’
মোটেই না, আশ্রয়ের কোন জায়গা নেই।
সেদিন ঠাঁই হবে (একমাত্র) তোমার প্রতিপালকেরই নিকট।
সেদিন মানুষকে জানিয়ে দেয়া হবে সে কী (‘আমাল) আগে পাঠিয়েছে আর কী পেছনে ছেড়ে এসেছে।
আসলে মানুষ নিজেই নিজের সম্পর্কে চাক্ষুসভাবে অবগত।
যদিও সে নানান অজুহাত পেশ করে।
(এ সূরাহ অবতীর্ণ হওয়ার সময় আল্লাহর রসূল তা মুখস্থ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লে আল্লাহ অভয় দিয়ে বললেন) তুমি তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তোমার জিভ নাড়াবে না।
এর সংরক্ষণ ও পড়ানোর দায়িত্ব আমারই।
কাজেই আমি যখন তা পাঠ করি, তখন তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর।
অতঃপর তা (ওয়াহীয়ে খফী বা প্রচ্ছন্ন ওয়াহীর মাধ্যমে) বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা আমারই দায়িত্ব।
(আবার পূর্বের প্রসঙ্গে ফিরে গিয়ে আল্লাহ বলছেন) না, প্রকৃতপক্ষে তোমরা ইহজীবনকেই ভালবাস,
আর আখিরাতকে উপেক্ষা কর।
কতক মুখ সেদিন উজ্জ্বল হবে।
তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে।
কতক মুখ সেদিন বিবর্ণ হবে।
তারা ধারণা করবে যে, তাদের সঙ্গে কোমর-ভাঙ্গা আচরণ করা হবে।
(তোমরা যে ভাবছ ক্বিয়ামত হবে না সেটা) কক্ষনো নয়, প্রাণ যখন কণ্ঠে এসে পৌঁছবে,
তখন বলা হবে, (তাকে বাঁচানোর জন্য) ঝাড়ফুঁক দেয়ার কেউ আছে কি?
সে (অর্থাৎ মুমূর্ষু ব্যক্তি) মনে করবে যে, (দুনিয়া হতে) বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে।
আর জড়িয়ে যাবে এক পায়ের নলা আরেক পায়ের নলার সাথে।
সেদিন (সব কিছুর) যাত্রা হবে তোমার প্রতিপালকের পানে।
কিন্তু না, সে বিশ্বাসও করেনি, নামাযও আদায় করেনি।
বরং সে প্রত্যাখ্যান করেছিল আর মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
অতঃপর সে অতি দম্ভভরে তার পরিবারবর্গের কাছে ফিরে গিয়েছিল।
দুর্ভোগ তোমার জন্য, দুর্ভোগ,
অতঃপর তোমার জন্য দুর্ভোগের উপর দুর্ভোগ।
মানুষ কি মনে করে নিয়েছে যে তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে। (তাকে পুনর্জীবিত করাও হবে না, আর বিচারের জন্য হাজির করাও হবে না)?
(তার মৃত্যুর পর আল্লাহ পুনরায় তাকে জীবিত করতে পারবেন না সে এটা কী ভাবে ধারণা করছে?) সে কি (মায়ের গর্ভে) নিক্ষিপ্ত শুক্রবিন্দু ছিল না?
তারপর সে হল রক্তপিন্ড, অতঃপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করলেন ও সুবিন্যস্ত করলেন।
অতঃপর তা থেকে তিনি সৃষ্টি করলেন জুড়ি- পুরুষ ও নারী।
এহেন স্রষ্টা কি মৃতকে আবার জীবিত করতে সক্ষম নন?