ওহে বস্ত্র আবৃত (ব্যক্তি)!
ওঠ, সতর্ক কর।
আর তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।
তোমার পোশাক পরিচ্ছদ পবিত্র রাখ।
(যাবতীয়) অপবিত্রতা থেকে দূরে থাক।
(কারো প্রতি) অনুগ্রহ করো না অধিক পাওয়ার উদ্দেশ্যে।
তোমার প্রতিপালকের (সন্তুষ্টির) জন্য ধৈর্য ধর।
যেদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে,
সেদিনটি হবে বড়ই কঠিন দিন,
(যা) কাফিরদের জন্য মোটেই সহজ নয়।
ছেড়ে দাও আমাকে (তার সঙ্গে বুঝাপড়া করার জন্য) যাকে আমি এককভাবে সৃষ্টি করেছি।
আর তাকে (ওয়ালীদ বিন মুগীরাহকে) দিয়েছি অঢেল ধন-সম্পদ,
আর অনেক ছেলে যারা সব সময় তার কাছেই থাকে।
এবং তার জীবনকে করেছি সচ্ছল ও সুগম।
এর পরও সে লোভ করে যে, আমি তাকে আরো দেই।
কক্ষনো না, সে ছিল আমার নিদর্শনের বিরুদ্ধাচারী।
শীঘ্রই আমি তাকে উঠাব শাস্তির পাহাড়ে (অর্থাৎ তাকে দিব বিপদের উপর বিপদ)।
সে চিন্তা ভাবনা করল এবং সিদ্ধান্ত নিল,
ধ্বংস হোক সে, কীভাবে সে (কুরআনের অলৌকিকতা স্বীকার করার পরও কেবল অহমিকার বশবর্তী হয়ে নবুওয়াতকে অস্বীকার করার) সিদ্ধান্ত নিল!
আবারো ধ্বংস হোক সে, সে সিদ্ধান্ত নিল কীভাবে!
তারপর সে তাকালো।
তারপর ভ্রু কুঁচকালো আর মুখ বাঁকালো।
তারপর সে পিছনে ফিরল আর অহংকার করল।
তারপর বলল- ‘এ তো যাদু ছাড়া আর কিছু নয়, এতো পূর্বে থেকেই চলে আসছে।
এটা তো মানুষের কথা মাত্র।’
শীঘ্রই আমি তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করব।
তুমি কি জান জাহান্নামের আগুন কী?
তা কাউকে জীবিতও রাখবে না, আর মৃত অবস্থায়ও ছেড়ে দেবে না।
চামড়া ঝলসে দেবে।
সেখানে নিয়োজিত আছে ঊনিশ জন ফেরেশতা।
আমিই কেবল ফেরেশতাদেরকে জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক করেছি। আর তাদের (এই) সংখ্যাকে কাফিরদের জন্য একটা পরীক্ষা বানিয়ে দিয়েছি (কেননা তারা এ কথা বিশ্বাসই করতে পারবে না যে মাত্র ঊনিশ জন ফেরেশতা বিশাল জাহান্নামের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবে) আর যেন কিতাবধারীগণ তা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে আর ঈমানদারদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবধারীগণ ও ঈমানদারগণ যেন কোন রকম সন্দেহের মধ্যে না থাকে। যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা আর কাফিররা যাতে বলে উঠে, ‘‘ এ ধরণের কথা দিয়ে আল্লাহ কী বোঝাতে চেয়েছেন?’’ এভাবে আল্লাহ যাকে চান গুমরাহ করেন আর যাকে চান সঠিক পথে পরিচালিত করেন। তোমার প্রতিপালকের বাহিনী (কারা এবং এর স্যখ্যা কত সে) সম্পর্কে তিনি ছাড়া কেউ জানে না। (জাহান্নামের) এ (বর্ণনা দেয়া হল) কেবল মানুষের নসীহত লাভের জন্য।
(এটা) কক্ষনো (ভিত্তিহীন) না, চাঁদের কসম,
রাতের কসম যখন তার অবসান হয়,
প্রভাতের কসম- যখন তা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে,
এই জাহান্নাম বড় বড় বিপদগুলোর একটি,
মানুষের জন্য সতর্ককারী,
তোমাদের মধ্যে যে (কল্যাণের পথে) এগিয়ে যেতে চায় অথবা পেছনে পড়ে থাকতে চায় তার জন্য
প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ।
কিন্তু ডান পাশের লোকেরা নয়।
তারা থাকবে জান্নাতে। তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেস করবে
অপরাধীদের সম্পর্কে
‘কিসে তোমাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে গেছে?
তারা বলবে, ‘আমরা নামায আদায়কারী লোকেদের মধ্যে শামিল ছিলাম না,
আর মিসকীনদেরকে খাবার খাওয়াতাম না,
আর আমরা (সত্য পথের পথিকদের) সমালোচনা করতাম সমালোচনাকারীদের সঙ্গে (থেকে)।
আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।
আমাদের নিকট নিশ্চিত বিশ্বাস (অর্থাৎ মৃত্যু) না আসা পর্যন্ত।’
তখন সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন কাজে আসবে না।
তাদের হয়েছে কী যে তারা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে?
তারা যেন ভয়ে সন্ত্রস্ত গাধা,
সিংহের সামনে থেকে পালাচ্ছে।
বস্তুতঃ তাদের প্রত্যেকেই চায়, তাকে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) খোলা চিঠি দেয়া হোক (এই মর্মে যে, তোমরা এই নবীকে মেনে নাও)।
না, তা কক্ষনো হতে পারে না, বরং (কথা এই যে) তারা আখিরাতকে ভয় করে না।
না, তা হতে পারে না, এটা (অর্থাৎ কুরআন সকলের জন্য) উপদেশবাণী।
এক্ষনে যার ইচ্ছে তাত্থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুক।
আল্লাহর ইচ্ছে ব্যতীত কেউ উপদেশ গ্রহণ করবে না, তিনিই ভয়ের যোগ্য, তিনিই ক্ষমা করার অধিকারী।