এক ব্যক্তি চাইল সে ‘আযাব যা অবশ্যই সংঘটিত হবে।
কাফিরদের জন্য তা প্রতিরোধ করার কেউ নেই
(যে শাস্তি আসবে) আল্লাহর নিকট হতে যিনি আসমানে উঠার সিঁড়িগুলোর মালিক,
ফেরেশতা এবং রূহ (অর্থাৎ জিবরীল) আল্লাহর দিকে আরোহণ করে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।
সুতরাং (হে নবী!) ধৈর্য ধর- সুন্দর সৌজন্যমূলক ধৈর্য।
তারা ঐ দিনটিকে সুদূর মনে করছে,
কিন্তু আমি তা নিকটে দেখতে পাচ্ছি।
সেদিন আকাশ হবে গলিত রূপার মত,
আর পাহাড়গুলো হবে রঙ্গীণ পশমের মত,
বন্ধু বন্ধুর খবর নিবে না,
যদিও তাদেরকে রাখা হবে পরস্পরের দৃষ্টির সামনে, অপরাধী সেদিনের ‘আযাব থেকে বাঁচার জন্য বিনিময়ে দিতে চাইবে তার সন্তানাদিকে,
তার স্ত্রী ও ভাইকে,
আর তার আত্মীয় গোষ্ঠীকে যারা তাকে আশ্রয় দিত,
আর দুনিয়ার সব্বাইকে, যাতে তা তাকে রক্ষা করতে পারে।
না, কক্ষনো নয়, ওটা জ্বলন্ত অগ্নিশিখা,
যা চামড়া তুলে দিবে,
জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে পেছনে ফিরে গিয়েছিল এবং সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
সে মালধন জমা করত, অতঃপর তা আগলে রাখত,
মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির-মনা করে,
বিপদ তাকে স্পর্শ করলে সে হয় উৎকণ্ঠিত,
কল্যাণ তাকে স্পর্শ করলে সে হয়ে পড়ে অতি কৃপণ,
তবে নামায আদায়কারীরা এ রকম নয়,
যারা তাদের নামাযে স্থির সংকল্প
যাদের ধন-সম্পদে একটা সুবিদিত অধিকার আছে,
প্রার্থী এবং বঞ্চিতদের,
যারা বিচার দিবসকে সত্য মানে।
যারা তাদের প্রতিপালকের শাস্তি সম্পর্কে ভীত কম্পিত,
তাদের প্রতিপালকের শাস্তি এমন যে তাত্থেকে নিজেকে নিরাপদ ভাবা যায় না,
যারা নিজেদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে
তাদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া, কেননা তাতে তারা তিরস্কৃত হবে না,
তবে এর বাইরে যারা অন্য কাউকে কামনা করবে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।
যারা তাদের আমানাত ও ও‘য়াদা রক্ষা করে,
যারা তাদের সাক্ষ্যদানে (সত্যতার উপর) সুপ্রতিষ্ঠিত,
যারা তাদের নামাযে যত্নবান,
তারাই হবে জান্নাতে সম্মানিত।
কাফিরদের কী হল যে, তারা তোমার দিকে ছুটে আসছে (তোমার কুরআন পাঠ শুনে তোমাকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করার জন্য),
ডান দিক আর বাম দিক থেকে দলে দলে,
তাদের প্রত্যেকেই কি এই লোভ করে যে, তাকে নি‘মাত-ভরা জান্নাতে দাখিল করা হবে?
কক্ষনো না, আমি তাদেরকে কী থেকে সৃষ্টি করেছি তা তারা জানে (এমন নগণ্য বস্তু থেকে সৃষ্ট মানুষ কেবল মানুষ হয়ে জন্ম নেয়ার কারণেই জান্নাতে চলে যাবে এ রকম লোভ করা বড়ই অবিবেচনাপ্রসূত ব্যাপার)।
আমি শপথ করছি উদয়স্থানসমূহের ও অস্তাচলসমূহের রব্বের-আমি অবশ্যই সক্ষম,
তাদের পরিবর্তে তাদের চেয়ে উৎকৃষ্ট মানুষ বানাতে, আমাকে পরাস্ত করবে এমন কেউ নেই।
কাজেই তাদেরকে অনর্থক কথাবার্তা ও খেল তামাশায় মত্ত থাকতে দাও যতক্ষণ না তারা তাদের সেদিনের সাক্ষাৎ লাভ করে যে দিনের ও‘য়াদা তাদেরকে দেয়া হয়েছিল।
যেদিন তারা কবর থেকে বের হবে দ্রুততার সাথে- যেন তারা কোন লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে চলেছে।
তাদের দৃষ্টি হবে অবনমিত, লাঞ্ছনা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে। এটাই হল সেই দিন যার ও‘য়াদা তাদেরকে দেয়া হচ্ছিল।