অতি মহান ও শ্রেষ্ঠ তিনি, সর্বময় কর্তৃত্ব ও রাজত্ব যাঁর হাতে; তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন- ‘আমালের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি (একদিকে যেমন) মহা শক্তিধর, (আবার অন্যদিকে) অতি ক্ষমাশীল।
যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান- একটির উপর আরেকটি। তোমরা মহা দয়াময়ের সৃষ্টিকার্যে কোনরূপ অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তোমরা আবার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখ, কোন দোষ-ত্রুটি দেখতে পাও কি?
অতঃপর তোমরা বারবার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখ; ক্লান্ত, শ্রান্ত ও ব্যর্থ হয়ে দৃষ্টি তোমার দিকে ফিরে আসবে।
আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দিয়ে সুসজ্জিত করেছি আর শয়ত্বানকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য, এবং প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।
যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের জন্য আছে জাহান্নামের শাস্তি; কতই না নিকৃষ্ট সে প্রত্যাবর্তনস্থল!
তাদেরকে যখন তাতে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা জাহান্নামের শ্বাস গ্রহণের (ভয়াবহ) গর্জন শুনতে পাবে আর তা হবে উদ্বেলিত।
ক্রোধে আক্রোশে জাহান্নাম ফেটে পড়ার উপক্রম হবে। যখনই কোন দলকে তাতে ফেলা হবে তখন তার রক্ষীরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আসেনি?’
তারা জবাব দিবে, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদেরকে অস্বীকার করেছিলাম আর আমরা বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কোন কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে পড়ে আছ।’
তারা আরো বলবে, ‘আমরা যদি শুনতাম অথবা বুঝতাম তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দাদের মধ্যে শামিল হতাম না।
তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে, অতএব দূর হোক জাহান্নামের অধিবাসীরা!
যারা তাদের প্রতিপালকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য আছে ক্ষমা আর মহা পুরস্কার।
তোমরা তোমাদের কথা চুপেচাপেই বল আর উচ্চৈঃস্বরেই বল, তিনি (মানুষের) অন্তরের গোপন কথা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত।
যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই কি জানেন না? তিনি অতি সূক্ষ্মদর্শী, ওয়াকিফহাল।
তিনি তোমাদের জন্য যমীনকে (তোমাদের ইচ্ছার) অধীন করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা তার বুকের উপর দিয়ে চলাচল কর, আর আল্লাহর দেয়া রিযক হতে আহার কর, পুনরায় জীবিত হয়ে তাঁর কাছেই যেতে হবে।
তোমরা কি তোমাদেরকে নিরাপদ মনে করে নিয়েছ যে, যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদেরকে যমীনে বিধ্বস্ত করে দিবেন না যখন তা হঠাৎ থর থর করে কাঁপতে থাকবে?
কিংবা তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ যে, যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠাবেন না? যাতে তোমরা জানতে পারবে যে, কেমন (ভয়ানক) ছিল আমার সতর্কবাণী।
তাদের আগের লোকেরাও (আমার সতর্কবাণী) প্রত্যাখ্যান করেছিল, ফলে কেমন (কঠোর) হয়েছিল আমার শাস্তি!
তারা কি তাদের উপর দিকে পাখীগুলোর প্রতি লক্ষ্য করে না যারা ডানা মেলে দেয় আবার গুটিয়ে নেয়? দয়াময় ছাড়া অন্য কেউই তাদেরকে (উপরে) ধরে রাখে না। তিনি সবকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।
দয়াময় ছাড়া কে তোমাদেরকে সাহায্য করবে তোমাদের সেনাবাহিনী হয়ে? কাফিররা তো কেবল ধোঁকার মধ্যে পড়ে আছে।
অথবা এমন কে আছে যে তোমাদেরকে রিযক দিবে যদি তিনি তাঁর রিযক বন্ধ করে দেন? আসলে তারা অহমিকা ও অনীহায় ডুবে আছে।
যে লোক উপুড় হয়ে মুখের ভরে চলে সেই কি অধিক সৎপথপ্রাপ্ত, না সেই লোক যে সোজা হয়ে সরল সঠিক পথে চলে?
বলে দাও, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন আর তোমাদেরকে দিয়েছেন শোনার ও দেখার শক্তি আর অন্তঃকরণ; তোমরা শোকর আদায় খুব অল্পই করে থাক।’
বলে দাও, ‘তিনিই তোমাদেরকে যমীনে ছড়িয়ে দিয়েছেন আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।
তারা বলে, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হয়েই থাক তাহলে বল (ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার) ও‘য়াদা কখন (বাস্তবায়িত হবে)?
বল, ‘সে জ্ঞান তো কেবল আল্লাহর কাছেই আছে, আমি শুধু একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।
অতঃপর যখন তারা তাকে (অর্থাৎ ক্বিয়ামতকে) নিকটে উপস্থিত দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের মুখ মলিন হয়ে যাবে, আর (তাদেরকে) বলা হবে, ‘এই তো (ও‘য়াদা বাস্তবায়িত হয়েছে) যা তোমরা চাচ্ছিলে।’
বল, ‘‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি আল্লাহ যদি আমাকে আর আমার সঙ্গী সাথীদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের উপর দয়া করেন (তাতে তোমাদের লাভটা কী?) মর্মান্তিক শাস্তি থেকে কাফিদেরকে বাঁচাবে কে?
বল, ‘তিনিই দয়াময়, আমরা তাঁর উপরেই ঈমান রাখি, আর তাঁর উপরেই নির্ভর করি। তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কে সুস্পষ্ট গুমরাহীতে আছে (আমরা না তোমরা)।’
বল, ‘‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের তলদেশে চলে যায়, তাহলে তোমাদেরকে কে এনে দেবে প্রবহমান পানি?’’