কাফ্-হা-ইয়্যা-‘আইন-সাদ।
এটা তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহের বিবরণ তাঁর বান্দাহ যাকারিয়্যার প্রতি।
যখন সে তার প্রতিপালককে আহবান করেছিল- এক গোপন আহবানে।
সে বলেছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার হাড়গুলো দুর্বল হয়ে গেছে, আর বার্ধক্যে আমার মস্তক সাদা হয়ে গেছে, হে আমার প্রতিপালক! তোমাকে ডেকে আমি কখনো বিফল হইনি।
আমার পরে আমার স্বগোত্রীয়রা (কী করবে) সে সম্পর্কে আমি আশঙ্কাবোধ করছি, আর আমার স্ত্রী হল বন্ধ্যা, কাজেই তুমি তোমার তরফ থেকে আমাকে একজন উত্তরাধিকারী দান কর
যে আমার উত্তরাধিকারী হবে আর উত্তরাধিকারী হবে ইয়া‘কুব পরিবারের; আর হে আমার প্রতিপালক! তাকে করুন আপনার সন্তুষ্টির পাত্র।
তিনি বললেন, ‘হে যাকারিয়া! আমি তোমাকে একটি পুত্রের শুভ সংবাদ দিচ্ছি যার নাম হবে ইয়াহইয়া, পূর্বে এ নামে আমি কাউকে আখ্যায়িত করিনি।’
সে বলল, ‘হে আমার পালনকর্তা! আমার পুত্র হবে কেমন করে, আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা, আর আমি বার্ধক্যের শেষ স্তরে পৌঁছে গেছি।’
তিনি বললেন, ‘এভাবেই হবে, তোমার প্রতিপালক বলেছেন, ‘এটা আমার পক্ষে সহজ। ইতোপূর্বে আমিই তোমাকে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলে না।’
সে বলল, ‘হে আমার পালনকর্তা! আমার জন্য একটা চিহ্ন স্থির করে দিন।’ তিনি বললেন, ‘তোমার চিহ্ন এই যে, তুমি তিন রাত মানুষের সঙ্গে কথা বলবে না যদিও তুমি কথা বলতে সক্ষম।’
অতঃপর সে তার কুঠরি থেকে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে গেল এবং ইশারায় তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর প্রশংসা-পবিত্রতা বর্ণনা করতে বলল।
(তার পুত্রের কাছে নির্দেশ আসল) ‘হে ইয়াহ্ইয়া! এ কিতাব (তাওরাত) সুদৃঢ়ভাবে ধারণ কর।’ আমি তাকে বাল্য কালেই জ্ঞান দান করেছিলাম।
আর (দিয়েছিলাম) আমার পক্ষ থেকে দয়া-মায়া ও পবিত্রতা। সে ছিল আল্লাহভীরু ।
আর পিতা-মাতার প্রতি সদয়, সে দাম্ভিক, অবাধ্য ছিল না।
তার উপর শান্তি যেদিন সে জন্মেছে, যেদিন তার মৃত্যু হবে আর যেদিন সে জীবন্ত হয়ে উত্থিত হবে।
এ কিতাবে (উল্লেখিত) মারইয়ামের কাহিনী বর্ণনা কর- যখন সে তার পরিবারবর্গ হতে আলাদা হয়ে পূর্ব দিকে এক জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিল।
সে তাদের থেকে (আড়াল করার জন্য) পর্দা টানিয়ে দিল। তখন আমি তার কাছে আমার রূহ্কে (অর্থাৎ জিবরীলকে) পাঠিয়ে দিলাম। তখন সে (অর্থাৎ জিবরীল) তার সামনে পূর্ণ মানুষের আকৃতি ধারণ করল।
মারইয়াম বলল, ‘আমি তোমা হতে দয়াময় আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি যদি তুমি আল্লাহকে ভয় কর’ (তবে আমার নিকট এসো না)।’
সে বলল, ‘আমি তোমার প্রতিপালক কর্তৃক প্রেরিত হয়েছি তোমাকে একটি পুত-পবিত্র পুত্র দানের উদ্দেশ্যে।’
সে বলল, ‘কেমন করে আমার পুত্র হতে পারে, যখন কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি, আর আমি অসতীও নই।’
সে বলল, ‘এভাবেই হবে, তোমার প্রতিপালক বলেছেন- ‘ওটা আমার জন্য সহজ, আমি তাকে মানুষের জন্য নিদর্শন বানাতে চাই আর আমার পক্ষ থেকে এক রহমত, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।’
অতঃপর ছেলে তার গর্ভে আসল। তখন সে তা নিয়ে দূরবর্তী জায়গায় চলে গেল।
সন্তান প্রসবের বেদনা তাকে এক খেজুর বৃক্ষতলের দিকে তাড়িত করল। সে বলে উঠল, ‘হায়! এর আগেই যদি আমি মরে যেতাম আর (মানুষের) স্মৃতি থেকে পুরোপুরি মুছে যেতাম!’
নিম্নদিক থেকে তাকে ডাক দেয়া হল, ‘তুমি দুঃখ করো না, তোমার প্রতিপালক তোমার পাদদেশ দিয়ে এক নির্ঝরিণী প্রবাহিত করে দিয়েছেন।
খেজুর গাছের কান্ড ধরে তুমি তোমার দিকে নাড়া দাও, তা তোমার উপর তাজা পরিপক্ক খেজুর পতিত করবে।
অতঃপর খাও, পান কর আর (তোমার) চোখ জুড়াও। যদি তুমি কোন লোককে দেখতে পাও তাহলে বলবে- আমি রহমান আল্লাহর জন্য সাওম পালনের মানৎ করেছি, কাজেই আমি কোন মানুষের সঙ্গে আজ কিছুতেই কথা বলব না।’
অতঃপর সে তার সন্তানকে বয়ে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে আসল। তারা বলল, ‘হে মারইয়াম! তুমি তো এক অদ্ভুত জিনিস নিয়ে এসেছ!
ওহে হারূনের বোন! তোমার পিতা তো খারাপ লোক ছিল না, আর তোমার মাও ছিল না কোন অসতী নারী।’
তখন মারইয়াম তার ছেলের দিকে ইশারা করল। তারা বলল, ‘আমরা কোলের বাচ্চার সঙ্গে কীভাবে কথা বলব?’
শিশুটি বলে উঠল, ‘আমি আল্লাহর বান্দাহ, তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আর আমাকে নবী করেছেন।
আমি যেখানেই থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন আর আমাকে নামায ও যাকাতের হুকুম দিয়েছেন- যতদিন আমি জীবিত থাকি।
আর (তিনি আমাকে করেছেন) আমার মাতার প্রতি সদয়, তিনি আমাকে দাম্ভিক হতভাগ্য করেননি।
আমার উপর আছে শান্তি যেদিন আমি জন্মেছি, যেদিন আমার মৃত্যু হবে আর আমি যেদিন জীবিত হয়ে উত্থিত হব।’
এই হচ্ছে মারইয়াম-পুত্র ঈসা, (এটাই) সত্য কথা যে বিষয়ে লোকেরা সন্দেহ পোষণ করে।
সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়, তিনি পবিত্র, মহান; যখন তিনি কিছু করার সিদ্ধান্ত করেন তখন তার জন্য শুধু বলেন, ‘হয়ে যাও’, আর তা হয়ে যায়।
আল্লাহ্ই আমার ও তোমাদের প্রতিপালক, কাজেই তোমরা তাঁরই ‘ইবাদাত কর, এটাই সরল সুদৃঢ় পথ।
অতঃপর দলগুলো তাদের মধ্যে মতভেদ করল। কাজেই সেই ভয়াবহ দিনের উপস্থিতকালে কাফিরদের জন্য ধ্বংস অনিবার্য।
যেদিন তারা আমার কাছে আসবে সেদিন কতই না স্পষ্টভাবে তারা শুনতে পাবে আর দেখতে পাবে। কিন্তু যালিমরা আজ স্পষ্ট গুমরাহীর মধ্যে পড়ে আছে।
বিপদের দিন সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করে দাও যখন ব্যাপার চূড়ান্ত করা হবে আর (দেখ) এ সম্পর্কে তারা উদাসীন আর তারা ঈমান আনে না।
যমীন আর যমীনের উপর যারা আছে তাদের মালিকানা আমারই থাকবে, আর তারা আমার কাছেই ফিরে আসবে।
এ কিতাবে উল্লেখিত ইবরাহীমের কথা স্মরণ কর, সে ছিল একজন সত্যনিষ্ঠ মানুষ, একজন নবী।
যখন সে তার পিতাকে বলেছিল, ‘হে আমার পিতা! আপনি কেন এমন জিনিসের ‘ইবাদাত করেন যা শুনে না, দেখে না, আর আপনার কোন কাজেই আসে না?
হে আমার পিতা! আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে যা আপনার কাছে আসেনি, কাজেই আমার অনুসরণ করুন, আমি আপনাকে সরল সঠিক পথ দেখাব।
হে আমার পিতা! আপনি শয়তানের ‘ইবাদাত করবেন না, শয়তান হচ্ছে দয়াময়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী।
হে আমার পিতা! আমার ভয় হয় যে, দয়াময়ের ‘আযাব আপনাকে ধরে বসবে, তখন আপনি শয়তানের বন্ধু হয়ে যাবেন।’
পিতা বলল, ‘হে ইবরাহীম! তুমি কি আমার দেবদেবীগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও তবে আমি অবশ্যই তোমাকে পাথরের আঘাতে মেরে ফেলব। তুমি চিরতরে আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও।’
ইবরাহীম বলল, ‘আপনার প্রতি সালাম, আমি আমার প্রতিপালকের নিকট আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, তিনি আমার প্রতি বড়ই মেহেরবান।
আমি পরিত্যাগ করছি আপনাদেরকে আর আপনারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকেন তাদেরকে। আমি আমার প্রতিপালককে ডাকি, আশা করি আমি আমার প্রতিপালককে ডেকে বঞ্চিত হব না।’
অতঃপর সে যখন তাদেরকে আর তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ‘ইবাদাত করত তাদেরকে পরিত্যাগ করল, তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক্ব আর ইয়া‘কূব আর তাদের প্রত্যেককে নবী করলাম।
আমি তাদেরকে দান করলাম আমার অনুগ্রহ আর সত্যিকার নাম-যশের সুউচ্চ সুখ্যাতি।
এ কিতাবে উল্লেখিত মূসার কথা স্মরণ কর, সে ছিল বিশেষভাবে মনোনীত, আর একজন রসূল ও নবী।
আমি তাকে ডাক দিয়েছিলাম তূর পাহাড়ের ডান পার্শ্ব থেকে আর গোপনে কথাবার্তা বলার জন্য তাকে নিকটবর্তী করেছিলাম।
আর আমি স্বীয় অনুগ্রহে তাকে দান করেছিলাম তার ভাই হারূনকে, সেও ছিল একজন নবী।
এ কিতাবে উল্লেখিত ইসমাঈলের কথা স্মরণ কর, সে ছিল ওয়া‘দা রক্ষায় (দৃঢ়) সত্যবাদী, আর ছিল একজন রসূল ও নবী।
সে তার পরিবারবর্গকে নামায ও যাকাতের হুকুম দিত আর সে ছিল তার প্রতিপালকের নিকট সন্তুষ্টির পাত্র।
এ কিতাবে উল্লেখিত ইদরীসের কথা স্মরণ কর, সে ছিল সত্যনিষ্ঠ, একজন নবী।
আমি তাকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছিলাম।
এরাই হল তারা আদাম বংশের নবীগণের মধ্য হতে, আর নূহের সঙ্গে যাদেরকে (নৌকায়) আরোহণ করিয়েছিলাম তাদের মধ্য হতে, আর ইবরাহীম ও ইসরাঈলের বংশধরদের মধ্য হতে যাদেরকে আমি অনুগ্রহ করেছিলাম, এরা তাদেরই মধ্য হতে, যাদেরকে আমি পথনির্দেশ দিয়েছিলাম আর বেছে নিয়েছিলাম, এদের নিকট দয়াময়ের আয়াত আবৃত্তি করা হলে তারা সাজদায় অবনত হয়ে কান্নাভরে লুটিয়ে পড়ত। [সাজদাহ]
অতঃপর তাদের পর এল অপদার্থ পরবর্তীরা, তারা নামায হারালো, আর লালসার বশবর্তী হল। তারা অচিরেই ধ্বংসের সম্মুখীন হবে।
তারা বাদে যারা তাওবাহ করবে, ঈমান আনবে আর সৎ কাজ করবে। ফলে এরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, এদের প্রতি এতটুকু যুলম করা হবে না।
স্থায়ী জান্নাত, দয়াময় তাঁর বান্দাহ্কে যে অদৃশ্য বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁর প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূর্ণ হবে।
সেখানে তারা শান্তির সম্ভাষণ ছাড়া কোন অপবাক্য শুনবে না। আর সকাল-সন্ধ্যা সেখানে তাদের জন্য থাকবে জীবন ধারণের উপকরণ।
এই হল সেই জান্নাত আমি যার উত্তরাধিকারী করব আমার বান্দাহদের মধ্যে মুত্তাকীদেরকে।
(ফেরেশতাগণ বলে) ‘আমরা আপনার প্রতিপালকের হুকুম ছাড়া অবতরণ করি না, যা আমাদের সামনে আছে, আর যা আমাদের পেছনে আছে আর এ দু’য়ের মাঝে যা আছে তা তাঁরই, আপনার প্রতিপালক কক্ষনো ভুলে যান না।
তিনি আকাশ, যমীন আর এ দু’য়ের মাঝে যা আছে তার প্রতিপালক, কাজেই তুমি তাঁর ‘ইবাদাত কর, আর তাঁর ‘ইবাদাতে নিয়মিত ও দৃঢ় থাক। তুমি কি তাঁর নামের গুণসম্পন্ন অন্য আর কেউ আছে বলে জান?
মানুষ বলে, ‘কী! আমি যখন মরে যাব, আমাকে তখন কি জীবিত করে উঠানো হবে?’
মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি পূর্বে তাকে সৃষ্টি করেছি আর সে তখন কিছুই ছিল না।
কাজেই তোমার রব্বের কসম! আমি তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই একত্রিত করব আর শয়তানদেরকেও। অতঃপর তাদেরকে জাহান্নামের চতুষ্পার্শ্বে নতজানু অবস্থায় অবশ্য অবশ্যই হাজির করব।
অতঃপর প্রত্যেক দল হতে দয়াময়ের প্রতি সবচেয়ে অবাধ্যকে অবশ্য অবশ্যই টেনে বের করব।
আর আমি অবশ্য অবশ্যই খুব ভাল করে জানি তাদের মধ্যে কারা জাহান্নামে দগ্ধ হওয়ার সর্বাধিক উপযুক্ত।
তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যাকে জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে না, এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য ফয়সালা।
অতঃপর মুত্তাকীদেরকে আমি রক্ষা করব আর যালিমদেরকে তার মধ্যে নতজানু অবস্থায় রেখে দেব।
আমার স্পষ্ট আয়াত যখন তাদের নিকট আবৃত্তি করা হয় তখন কাফিররা মু’মিনদেরকে বলে, ‘দু’টি দলের মধ্যে মর্যাদায় কোনটি শ্রেষ্ঠ আর মজলিস হিসেবে অধিক উত্তম?’
আমি তাদের পূর্বে বহু মানব বংশকে ধ্বংস করেছি যারা উপায় উপকরণে আর বাইরের চাকচিক্যে তাদের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ছিল।
বল, যারা গুমরাহীতে পড়ে আছে, দয়াময় তাদের জন্য (রশি) ঢিল দিয়ে দেন, যে পর্যন্ত না তারা দেখতে পাবে যার ওয়া‘দা তাদেরকে দেয়া হচ্ছে- তা শাস্তিই হোক কিংবা ক্বিয়ামতই হোক।’ তখন তারা জানতে পারবে মর্যাদায় কে নিকৃষ্ট আর জনবলে দুর্বল।
যারা সৎপথ সন্ধান করে আল্লাহ তাদেরকে অধিক হিদায়াত দান করেন। আর স্থায়ী সৎকর্মসমূহ তোমার পালনকর্তার নিকট সাওয়াবের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ আর প্রতিদান হিসেবেও শ্রেষ্ঠ।
তুমি কি লক্ষ্য করেছ সে ব্যক্তিকে যে আমার নিদর্শনসমূহকে প্রত্যাখ্যান করেছে আর সে বলে, ‘আমাকে অবশ্য অবশ্যই সম্পদ আর সন্তানাদি দেয়া হবে।’
সে কি অদৃশ্য বিষয় জেনে ফেলেছে, নাকি দয়াময়ের নিকট থেকে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে?
কক্ষনো না, তারা যা বলে আমি তা লিখে রাখব আর আমি তার শাস্তি বাড়াতেই থাকব, বাড়াতেই থাকব।
সে যে বিষয়ের কথা বলে (তার সম্পদ-সরঞ্জাম ও জনবলের গর্ব করে) তা থাকবে আমার অধিকারে আর সে আমার কাছে আসবে নিঃসঙ্গ, একাকী।
তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যান্য ইলাহ গ্রহণ করেছে যাতে তারা (অর্থাৎ ঐ কল্পিত মা‘বুদগুলো) তাদের জন্য পৃষ্ঠপোষক হয়।
কক্ষনো না, তারা তাদের ‘ইবাদাত অস্বীকার করবে আর তাদের বিরোধী হয়ে যাবে।
তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, আমি কাফিরদের জন্য শয়ত্বানকে ছেড়ে রেখেছি তাদেরকে মন্দ কর্ম করতে প্ররোচিত করার জন্য।
কাজেই তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করো না, আমি গুণে রাখছি তাদের জন্য নির্দিষ্ট (দিবসের) সংখ্যা।
যেদিন মুত্তাকীদেরকে দয়াময়ের নিকট একত্রিত করব সম্মানিত অতিথি হিসেবে।
আর আমি অপরাধীদেরকে জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাব (যেভাবে পিপাসার্ত গরু বাছুরকে পানির দিকে তাড়িয়ে নেয়া হয়)।
দয়াময়ের নিকট যে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে সে ছাড়া অন্য কারো সুপারিশ করার অধিকার থাকবে না।
তারা বলে, ‘দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’
(এমন কথা ব’লে) তোমরা তো এক ভয়ানক বিষয়ের অবতারণা করেছ।
যাতে আকাশ বিদীর্ণ হওয়ার, পৃথিবী খন্ড খন্ড হওয়ার আর পর্বতমালা চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে পতিত হওয়ার, উপক্রম হয়েছে।
কারণ তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে।
অথচ দয়াময়ের মহান মর্যাদার জন্য এটা শোভনীয় নয় যে, তিনি সন্তান গ্রহণ করবেন।
আকাশ আর যমীনে এমন কেউ নেই যে, দয়াময়ের নিকট বান্দাহ হয়ে হাযির হবে না।
তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন আর তাদেরকে বিশেষভাবে গুণে গুণে রেখেছেন।
কিয়ামাতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে আসবে একাকী অবস্থায়।
যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, দয়াময় তাদের প্রতি ভালবাসা দান করবেন।
আমি তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করেছি যাতে তুমি তার সাহায্যে মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার আর ঝগড়াটে লোকেদেরকে সতর্ক করতে পার।
তাদের পূর্বে আমি কত মানব বংশকে ধ্বংস করে দিয়েছি, তুমি তাদের একজনকেও কি (এখন) দেখতে পাও অথবা তাদের ক্ষীণতম আওয়াজও কি শুনতে পাও?