All Islam Directory
1

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন, আর তাতে কোন বক্রতার অবকাশ রাখেননি।

2

(তিনি সেটাকে করেছেন) সত্য, স্পষ্ট ও অকাট্য তাঁর কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য। আর যারা সৎকাজ করে সেই মু’মিনদেরকে সুসংবাদ দেয়ার জন্য যে, তাদের জন্য আছে উত্তম প্রতিফল।

3

তাতে তারা চিরকাল থাকবে।

4

আর তাদেরকে সতর্ক করার জন্য যারা বলে, ‘আল্লাহ পুত্র গ্রহণ করেছেন।’

5

এ সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই, আর তাদের পিতৃ-পুরুষদেরও ছিল না। তাদের মুখ থেকে বের হয় বড়ই সাংঘাতিক কথা। তারা যা বলে তা মিথ্যে ছাড়া কিছুই নয়।

6

তারা এ বাণীতে (কুরআনে) বিশ্বাস না করার কারণে মনে হচ্ছে (হে নাবী!) তুমি তার দুঃখে তোমার নিজের জান বিনাশ করে দেবে।

7

যমীনের উপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোকে তার শোভা-সৌন্দর্য করেছি যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, ‘আমালের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।

8

আমি অবশ্যই তার উপর যা আছে তা বৃক্ষলতাহীন শুকনো ধূলা মাটিতে পরিণত করব।

9

তুমি কি মনে কর যে, গুহা ও রকীমের অধিবাসীরা ছিল আমার নিদর্শনগুলোর মধ্যে বিস্ময়কর?

10

যুবকরা যখন গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করল তখন তারা বলল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তোমার নিকট হতে আমাদেরকে রহমত দান কর আর আমাদের ব্যাপারটি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন কর।’

11

অতঃপর আমি তাদেরকে গুহায় ঘুমন্ত অবস্থায় কয়েক বছর রেখে দিলাম।

12

পরে তাদেরকে জাগ্রত করলাম এটা জানার জন্য যে, (গুহাবাসীরা আর যাদের যুগে তারা জাগ্রত হয়েছিল সে যুগের লোকেরা এ) দু’টি দলের মধ্যে কোনটি তাদের অবস্থানকালের সঠিক হিসাব করতে পারে।

13

আমি তাদের সঠিক বৃত্তান্ত তোমার কাছে বর্ণনা করছি। তারা ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছিল আর আমি তাদের হিদায়াত (ঈমানী চেতনাকে) বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম।

14

আর তাদের দিল মযবুত করে দিয়েছিলাম যখন তারা (মুশরিক রাজা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে) দাঁড়িয়ে গেল তখন বলল, ‘আমাদের প্রতিপালক তো তিনিই যিনি আসমানসমূহ যমীনের প্রতিপালক। আমরা কক্ষনো তাঁকে ত্যাগ করে অন্য কোন ইলাহকে ডাকব না। যদি আমরা ডাকি তাহলে মহা অপরাধের কথাই বলা হবে।

15

আমাদের জাতির এই লোকেরা তাঁর পরিবর্তে বহু ইলাহ গ্রহণ করেছে, তারা তাদের ইলাহদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ পেশ করে না কেন? তার থেকে বড় যালিম আর কে হতে পারে যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে?

16

এখন যেহেতু তোমরা তাদের থেকে আর তারা আল্লাহ ছাড়া যেগুলোর ‘ইবাদাত করে তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিয়েছ, তখন চল, গুহায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ কর। তোমাদের জন্য তোমাদের প্রতিপালক তাঁর কল্যাণ বিস্তার করবেন আর তোমাদের কাজ-কর্মকে ফলদায়ক করে দেবেন।’

17

তুমি দেখতে পেতে সূর্য উদয়ের সময় তাদের গুহা হতে ডান দিকে হেলে যেত, আর যখন তা অস্তমিত হত তখন তা তাদের থেকে বাম দিকে নেমে যেত, আর তারা ছিল গুহার অভ্যন্তরে বিশাল চত্বরে। এ হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আল্লাহ যাকে সৎপথ দেখান সে সঠিকপথপ্রাপ্ত আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তার জন্য তুমি কক্ষনো সৎপথের দিশা দানকারী অভিভাবক পাবে না।

18

তুমি মনে করবে যে তারা সজাগ, অথচ তারা ছিল ঘুমন্ত, আমি তাদের ডানে বামে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম। আর তাদের কুকুরটি ছিল গুহাদ্বারের সম্মুখে তার সামনের পা দু’টি প্রসারিত করে। তুমি যদি তাদেরকে তাকিয়ে দেখতে তাহলে অবশ্যই পেছন ফিরে পালিয়ে যেতে, আর অবশ্যই তাদের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়তে।

19

আর তাদের এই অবস্থায় আমি তাদেরকে জাগ্রত করলাম যাতে তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের একজন বলল, ‘তোমরা ক’দ্দিন থাকলে?’ তারা বলল, ‘আমরা একদিন কিংবা একদিনের কিছু অংশ হয়তো রয়েছি।’ (শেষে) তারা (সবাই) বলল, ‘তোমাদের প্রতিপালকই ভাল জানেন তোমরা কতকাল রয়েছ। এখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রা নিয়ে শহরে পাঠিয়ে দাও। সে যেন দেখে উত্তম খাবার কোনটি আর তাথেকে তোমাদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসে। সে যেন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করে, আর তোমাদের ব্যাপারে কেউ যেন কোনক্রমেই টের না পায়।

20

যদি তারা তোমাদের কথা জেনে ফেলে তাহলে তারা তোমাদেরকে পাথর মেরে হত্যা করবে কিংবা তোমাদেরকে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিবে, সে অবস্থায় তোমরা কক্ষনো কল্যাণ লাভ করতে পারবে না।’

21

আমি এভাবে তাদের ব্যাপারটা লোকেদেরকে ওয়াকিফহাল করে দিলাম যাতে তারা জানতে পারে যে, আল্লাহর ওয়া‘দা সত্য, আর ক্বিয়ামাতের দিন সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। যখন তারা (অর্থাৎ নগরবাসীরা) নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে বাদানুবাদ করছিল, (কতক) বলল, ‘তাদের উপর সৌধ নির্মাণ কর।’ তাদের প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে ভাল জানেন। তাদের কর্তব্যকর্ম সম্পর্কে যাদের মতামত প্রাধান্য লাভ করল তারা বলল, ‘আমরা তাদের উপর অবশ্য অবশ্যই মাসজিদ নির্মাণ করব।’

22

কতক লোক বলবে, ‘তারা ছিল তিনজন, তাদের চতুর্থটি ছিল তাদের কুকুর।’ আর কতক লোক বলবে, ‘তারা ছিল পাঁচ জন, তাদের ষষ্ঠটি ছিল তাদের কুকুর’, (এ কথা তারা বলবে) অজানা বিষয়ে সন্দেহপূর্ণ অনুমানের ভিত্তিতে। আবার তাদের কতক লোক বলবে, ‘তারা ছিল সাতজন, আর তাদের অষ্টমটি ছিল তাদের কুকুর।’ বল, ‘তাদের সংখ্যা সম্পর্কে আমার প্রতিপালকই বেশি জানেন।’ অল্প কয়জন ছাড়া তাদের সংখ্যা সম্পর্কে কেউ জানে না। কাজেই সাধারণ কথাবার্তা ছাড়া তাদের ব্যাপার নিয়ে বিতর্ক করো না, আর তাদের সম্পর্কে কারো কাছে কিছু জিজ্ঞেসও করো না।

23

কোন বিষয় সম্পর্কে কক্ষনো বল না যে, ‘ওটা আমি আগামীকাল করব।’

24

‘আল্লাহ ইচ্ছে করলে’ বলা ছাড়া। যদি ভুলে যাও (তবে মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে) তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর আর বল, ‘আশা করি আমার প্রতিপালক আমাকে এর চেয়েও সত্যের নিকটবর্তী পথে পরিচালিত করবেন। (কেননা এক ব্যক্তি যেভাবেই সঠিক পথে চলুক না কেন, তার চেয়েও উত্তমভাবে পথ চলা যেতে পারে)।

25

আর (কারো মতে) তারা তাদের গুহায় ছিল তিনশ’ বছর আর কিছু লোক নয় বছর বাড়িয়ে নিয়েছে।

26

বল, ‘আল্লাহই ভাল জানেন তারা কতকাল (গুহায়) ছিল।’ আসমানসমূহ যমীনের অদৃশ্যের জ্ঞান তাঁরই আছে, কত স্পষ্টই না তিনি দেখেন, কত স্পষ্টই না তিনি শোনেন। তিনি ছাড়া তাদের কোন অভিভাবক নেই, তিনি তাঁর কর্তৃত্বে কাউকে অংশীদার করেন না।

27

আর তুমি তোমার কাছে ওয়াহীকৃত তোমার প্রতিপালকের কিতাব থেকে পাঠ করে শুনাও, তাঁর কথা পরিবর্তন করে দেবে এমন কেউ নেই, আর তাঁকে ছাড়া তুমি কক্ষনো অন্য কাউকে আশ্রয়স্থল হিসেবে পাবে না।

28

তুমি দৃঢ় চিত্ত হয়ে তাদের সাথে অবস্থান কর যারা সকাল-সন্ধ্যা তাদের প্রতিপালককে আহবান করে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের সন্ধানে। পার্থিব জীবনের শোভা ও চাকচিক্য কামনায় তুমি তাদের থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না। তুমি তার আনুগত্য কর না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ হতে উদাসীন করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির আনুগত্য করে আর যার কার্যকলাপ হচ্ছে সীমালঙ্ঘনমূলক।

29

আর বলে দাও, ‘সত্য এসেছে তোমাদের রব্বের নিকট হতে, কাজেই যার ইচ্ছে ঈমান আনুক আর যার ইচ্ছে সত্যকে অস্বীকার করুক।’ আমি (অস্বীকারকারী) যালিমদের জন্য আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি যার লেলিহান শিখা তাদেরকে ঘিরে ফেলেছে। তারা পানীয় চাইলে তাদেরকে গলিত শিশার ন্যায় পানি দেয়া হবে যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে, কতই না নিকৃষ্ট পানীয়! আর কতই না নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল!

30

যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে- যে উত্তমভাবে কাজ করে আমি তার কর্মফল বিনষ্ট করি না।

31

তাদের জন্য আছে স্থায়ী জান্নাত যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত। সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণ কংকণে। সূক্ষ্ম ও গাঢ় রেশমের সবুজ পোশাক তারা পরিধান করবে। তারা গদি লাগানো উচ্চাসনে হেলান দিয়ে বসবে। কতই না উত্তম পুরস্কার! কতই না উত্তম আশ্রয়স্থল!

32

তুমি তাদের কাছে দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর যাদের একজনকে আমি দিয়েছিলাম দু’টি আঙ্গুরের বাগান, আর ওগুলোকে খেজুর গাছ দিয়ে ঘিরে দিয়েছিলাম আর ও দু’টির মাঝে দিয়েছিলাম শষ্যক্ষেত।

33

দু’টো বাগানই ফল দিত, এতে এতটুকু ত্রুটি করত না। এ দু’য়ের মাঝে আমি ঝর্ণাধারা প্রবাহিত করেছিলাম।

34

লোকটির উৎপাদন ছিল প্রচুর। একদিন কথাবার্তা বলার সময় সে তার প্রতিবেশীকে বলল, ‘আমি সম্পদে তোমা হতে শ্রেষ্ঠ, আর জনবলে তোমা হতে শক্তিশালী।’

35

নিজের প্রতি যুলম করে সে তার বাগানে প্রবেশ করল। সে বলল, ‘আমি ধারণা করি না যে, এটা কোনদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।

36

আমি মনে করি না যে কিয়ামাত হবে। আর যদি আমাকে আমার প্রতিপালকের কাছে ফিরিয়ে নেয়া হয়ই, তাহলে অবশ্য অবশ্যই আমি পরিবর্তে আরো উৎকৃষ্ট স্থান পাব।

37

কথার প্রসঙ্গ টেনে তার সাথী বলল, ‘তুমি কি তাঁকে অস্বীকার করছ যিনি তোমাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর শুক্র-কীট হতে, অতঃপর তোমাকে পূর্ণাঙ্গ দেহসম্পন্ন মানুষ বানিয়ে দিয়েছেন?

38

(আর আমার ব্যাপারে কথা হল) সেই আল্লাহই আমার প্রতিপালক, আমি কাউকে আমার প্রতিপালকের শরীক করব না।

39

তুমি যখন তোমার বাগানে প্রবেশ করলে তখন কেন বললে না, ‘আল্লাহ যা ইচ্ছে করেছেন (তা-ই হয়েছে), আল্লাহ ছাড়া কারো কোন শক্তি নেই। যদিও তুমি আমাকে ধনে-জনে তোমার চেয়ে কম দেখ,

40

সম্ভবতঃ আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার বাগান অপেক্ষাও উত্তম কিছু দান করবেন আর তোমার বাগানের উপর আসমান হতে কোন বিপদ পাঠিয়ে দিবেন, ফলে তা শূন্য ময়দানে পরিণত হবে।

41

কিংবা তার পানি ভূ-গর্ভে চলে যাবে, ফলে তুমি কক্ষনো তার খোঁজ পাবে না।’

42

ধ্বংস তার ফল-ফসলকে ঘিরে ফেলল আর তাতে সে যা খরচ করেছিল তার জন্য হাত মলতে লাগল। তা ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় ভূমিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। সে বলল, ‘হায়, আমি যদি আমার রব্ব-এর সাথে কাউকে শরীক না করতাম!’

43

আর আল্লাহ ছাড়া তাকে সাহায্য করার কোন দলবলও ছিল না, আর সে নিজেও এর মোকাবিলা করতে পারল না।

44

এ ব্যাপারে যাবতীয় কর্তৃত্ব ক্ষমতা সেই সত্যিকার আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। পুরস্কার দানে তিনিই উৎকৃষ্ট, আর সফল পরিণাম দানে তিনিই শ্রেষ্ঠ।

45

তাদের কাছে দুনিয়ার এ জীবনের দৃষ্টান্ত পেশ কর : তা হল পানির মত যা তিনি আকাশ হতে বর্ষণ করেন, যা দিয়ে যমীনে গাছ-গাছড়া ঘন হয়ে উদ্গত হয়, অতঃপর তা শুকনো খড়কুটায় পরিণত হয় যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়। আল্লাহ হলেন সকল বিষয়ে শক্তিমান।

46

ধন-সম্পদ আর সন্তানাদি পার্থিব জীবনের শোভা-সৌন্দর্য, আর তোমার প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার লাভের জন্য স্থায়ী সৎকাজ হল উৎকৃষ্ট আর আকাঙ্ক্ষা পোষণের ভিত্তি হিসেবেও উত্তম।

47

(সেদিনের কথা চিন্তা কর) যেদিন আমি পর্বতমালাকে চালিত করব, আর পৃথিবীকে দেখতে পাবে উন্মুক্ত প্রান্তর আর তাদের সববাইকে আমি একত্রিত করব, কাউকেও বাদ দেব না।

48

তাদেরকে তোমার প্রতিপালকের সামনে সারিবদ্ধভাবে হাজির করা হবে (আর তাদেরকে বলা হবে), ‘তোমরা আমার কাছে এসেছ তেমনিভাবে যেভাবে আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম। কিন্তু তোমরা তো ধারণা করেছিলে যে, আমার কাছে তোমাদের সাক্ষাতের নির্দিষ্টকাল আমি কক্ষনো উপস্থিত করব না।’

49

আর ‘আমালনামা হাজির করা হবে, আর তাতে যা (লেখে রাখা আছে) তার কারণে তুমি অপরাধী লোকদেরকে দেখতে পাবে ভীত আতঙ্কিত। আর তারা বলবে, ‘হায় কপাল! এটা কেমন কিতাব যে ছোট বড় কোন কাজই ছেড়ে দেয়নি বরং সব কিছুর হিসাব রেখেছে।’ তারা যা করেছে তা সামনে উপস্থিত পাবে, আর তোমার প্রতিপালক কারো প্রতি যুলম করবেন না।

50

স্মরণ কর, যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম, ‘আদামকে সাজদাহ কর।’ তখন ইবলিশ ছাড়া তারা সবাই সাজদাহ করল। সে ছিল জ্বীনদের অন্তর্ভুক্ত। সে তার প্রতিপালকের নির্দেশ লঙ্ঘন করল। এতদসত্ত্বেও তোমরা কি আমাকে বাদ দিয়ে তাকে আর তার বংশধরকে অভিভাবক বানিয়ে নিচ্ছ? অথচ তারা তোমাদের দুশমন। যালিমদের এই বিনিময় বড়ই নিকৃষ্ট!

51

আসমান যমীনের সৃষ্টিকালে আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখিনি, আর তাদের নিজেদের সৃষ্টি (প্রত্যক্ষ করার জন্য)ও না, পথভ্রষ্টকারীদেরকে সাহায্যকারী গ্রহণ করা আমার কাজ নয়।

52

সেদিন তিনি বলবেন, ‘তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তাদেরকে ডাক।’ তখন তারা তাদেরকে ডাকবে, কিন্তু তারা তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। আর আমি উভয় দলের মাঝে রেখে দেব এক ধ্বংস-গহ্বর।

53

অপরাধীরা আগুন দেখতে পাবে আর মনে করবে যে, তাদেরকে তাতে পতিত হতে হবে, কিন্তু সেখান থেকে ফিরে যাবার তারা কোনই উপায় পাবে না।

54

আমি এ কুরআনে মানুষের (জ্ঞান লাভের) জন্য যাবতীয় দৃষ্টান্ত বিশদভাবে বিবৃত করেছি কিন্তু মানুষ অধিকাংশ বিষয়েই বিতর্ককারী।

55

তাদের কাছে যখন পথের নির্দেশ আসে তখন ঈমান আনতে আর তাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাইতে মানুষকে এ ছাড়া আর অন্য কিছুই বাধা দেয় না যে, (তারা অপেক্ষায় থাকে যে) অতীতের জাতিগুলোর সঙ্গে যা করা হয়েছে, কখন তাদের সঙ্গেও তাই করা হবে অথবা কখন ‘আযাবকে তারা সরাসরি সামনে দেখতে পাবে।

56

আমি রসূলদেরকে পাঠিয়ে থাকি একমাত্র সুসংবাদদাতা আর সতর্ককারী হিসেবে। কিন্তু কাফিরগণ মিথ্যা যুক্তি পেশ করে বিতর্ক করছে তা দিয়ে সত্যকে দুর্বল করে দেয়ার উদ্দেশে, আর তারা আমার নিদর্শন ও ভয় দেখানোকে হাসি-তামাশার বিষয় বানিয়ে নিয়েছে।

57

তার থেকে বড় যালিম আর কে আছে যাকে তার প্রতিপালকের আয়াতগুলো স্মরণ করিয়ে দেয়া হলে সে তাত্থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আর সে পূর্বে কৃত তার কর্মের (খারাপ পরিণতির) কথা ভুলে যায়। আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়ে দিয়েছি যাতে তারা তা (অর্থাৎ কুরআন) বুঝতে না পারে, আর তাদের কানে এঁটে দিয়েছি বধিরতা। তুমি তাদেরকে সৎপথে ডাকলেও তারা কক্ষনো সৎপথ গ্রহণ করবে না।

58

তোমার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, দয়ার আধার। তাদের কৃতকর্মের জন্য তিনি যদি তাদেরকে পাকড়াও করতেন, তাহলে তাদের উপর অবশ্যই শীঘ্রই ‘আযার পাঠাতেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে কৃত ওয়া‘দার জন্য আছে নির্দিষ্ট সময়, যাকে পাশ কাটিয়ে তারা কক্ষনো আশ্রয়ের কোন জায়গা পাবে না।

59

ঐ সব জনদপকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছিলাম যখন তারা বাড়াবাড়ি করেছিল, আর তাদের ধ্বংস সাধনের জন্য একটা প্রতিশ্রুত সময় স্থির করেছিলাম।

60

স্মরণ কর, যখন মূসা তার সঙ্গীকে বলেছিল, ‘দুই সমুদ্রের মিলনস্থলে পৌঁছা না পর্যন্ত আমি চলতেই থাকবো যদিও বছরের পর বছর চলতেও হয়।’

61

অতঃপর যখন তারা দু’জনে দুই সমুদ্রের মিলন স্থলে পৌঁছল, তারা তাদের মাছের কথা ভুলে গেল আর সেটি সমুদ্রে তার পথ করে নিল সুড়ঙ্গের মত।

62

যখন তারা আরো এগিয়ে গেল, সে তার সঙ্গীকে বলল, ‘আমাদের সকালের খাবার আন, আমরা আমাদের এই সফরে বড়ই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’

63

সঙ্গীটি বলল, ‘আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন শিলাখন্ডে (বসে) ছিলাম তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। সেটার কথা আপনাকে বলতে শয়তানই আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল আর মাছটি বিস্ময়করভাবে সমুদ্রে তার রাস্তা করে চলে গিয়েছিল।’

64

মূসা বলল, ‘এটাই তো সে জায়গা যেটা আমরা খুঁজছি।’ কাজেই তারা তাদের পায়ের চিহ্ন ধরে ফিরে গেল।

65

তখন তারা আমার বান্দাদের এক বান্দাকে পেল, যার প্রতি আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ দান করেছিলাম আর আমার পক্ষ থেকে তাকে বিশেষ জ্ঞান দান করেছিলাম।

66

মূসা তাকে বলল, ‘আমি কি এ শর্তে আপনার অনুসরণ করব যে, আপনি আমাকে সেই (বিশেষ) জ্ঞান থেকে শিক্ষা দেবেন যে জ্ঞান আপনাকে শেখানো হয়েছে?’

67

সে বলল, ‘আপনি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না।’

68

আপনি কীভাবে সে বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করবেন যা আপনার জ্ঞানের আয়ত্বের বাইরে?’

69

মূসা বলল, ‘আল্লাহ চাইলে আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন, আমি আপনার কোন নির্দেশই লঙ্ঘন করব না।’

70

সে বলল, ‘আপনি যেহেতু আমার অনুসরণ করতেই চান, তাহলে আপনি আমাকে কোন ব্যাপারেই প্রশ্ন করবেন না যতক্ষণ না আমি নিজেই সে সম্পর্কে আপনাকে বলি।’

71

অতঃপর তারা দু’জনে চলতে লাগল যতক্ষণ না তারা নৌকায় উঠল, অতঃপর লোকটি নৌকায় ছিদ্র করে দিল। মূসা বলল, ‘আপনি কি তার আরোহীদেরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য তাতে ছিদ্র করলেন? আপনি তো এক অদ্ভুত কাজ করলেন।’

72

সে বলল, ‘আমি কি আপনাকে বলিনি যে, আপনি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্য ধরতে পারবেন না?’

73

মূসা বলল, ‘আমার ভুলের জন্য আমাকে পাকড়াও করবেন না, আর আমার ব্যাপারে আপনি অধিক কড়াকড়ি করবেন না।’

74

তারপর তারা চলতে লাগল। চলতে চলতে এক বালককে তারা দেখতে পেল। তখন সে তাকে হত্যা করে ফেলল। মূসা বলল, ‘আপনি কি এক নিরাপরাধ জীবনকে কোন প্রকার হত্যার অপরাধ ছাড়াই হত্যা করে দিলেন? আপনি তো গুরুতর এক অন্যায় কাজ করে ফেললেন!’

75

সে বলল, ‘আমি কি আপনাকে বলিনি যে, আপনি আমার সঙ্গে কক্ষনো ধৈর্য ধরতে পারবেন না?’

76

মূসা বলল, ‘এরপর আমি যদি কোন বিষয়ে আপনাকে জিজ্ঞেস করি, তাহলে আপনি আর আমাকে সঙ্গে রাখবেন না, ওযর অন্যায় আমার পক্ষ থেকেই ঘটেছে।’

77

তারপর তারা উভয়ে চলতে লাগল, চলতে চলতে তারা এক জনপদে পৌঁছে সেখানকার লোকেদের কাছে খাবার চাইল। কিন্তু তারা তাদের দু’জনকে আতিথ্য প্রদান করতে অস্বীকার করল। তারা দু’জন সেখানে একটা দেয়াল দেখতে পেল যা পড়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল। তখন সে ব্যক্তি সেটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দিল। মূসা বলল, ‘আপনি ইচ্ছে করলে এর জন্য পারিশ্রমিক নিতে পারতেন।’

78

লোকটি বলল, ‘এখানেই আপনার সাথে আমার সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটল। এখন আমি আপনাকে ব্যাখ্যা জানিয়ে দেব যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধরতে পারেননি।

79

নৌকাটির ব্যাপার হল- তা ছিল কয়েকজন গরীব লোকের, তারা সমুদ্রে জীবিকার জন্য শ্রম করত। আমি সেটাকে খুঁতযুক্ত করতে চাইলাম, কারণ তাদের পশ্চাতে ছিল এক রাজা, সে জোরপূর্বক সব নৌকা কেড়ে নিত।

80

আর বালকটির ব্যাপার হল- তার মাতা-পিতা ছিল মু’মিন। আমরা শঙ্কা করলাম যে, সে তার বিদ্রোহমূলক আচরণ ও (আল্লাহর প্রতি) কুফুরী দ্বারা তাদেরকে কষ্ট দেবে।

81

এ কারণে আমরা চাইলাম যে, তাদের প্রতিপালক তাদেরকে তার পরিবর্তে অধিক পবিত্র ও দয়া-মায়ায় অধিক ঘনিষ্ঠ (সন্তান) দান করবেন।

82

আর ঐ দেয়ালটির বিষয় হল- তা ছিল ঐ শহরের দু’জন ইয়াতীম বালকের। তার নীচে ছিল তাদের জন্য রক্ষিত ধন, তাদের পিতা ছিল এক সৎ ব্যক্তি। তাই তোমার প্রতিপালক চাইলেন তারা দু’জন যৌবনে উপনীত হোক আর তাদের গচ্ছিত ধন বের করে নিক- যা হল তোমার প্রতিপালকের রহমত বিশেষ। এ সব আমি নিজের পক্ষ থেকে করিনি। এ হল সে বিষয়ের ব্যাখ্যা যে সম্পর্কে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি।’

83

তোমাকে তারা যুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। বল, ‘আমি তার বিষয় তোমাদের নিকট কিছু বর্ণনা করব।’

84

আমি তাকে পৃথিবীতে আধিপত্য দান করেছিলাম আর তাকে সব রকমের উপায় উপাদান দিয়েছিলাম।

85

একবার সে এক রাস্তা ধরল (অর্থাৎ একদিকে একটা অভিযান চালাল)।

86

চলতে চলতে যখন সে সূর্যাস্তের স্থানে পৌঁছল, তখন সে সূর্যকে অস্বচ্ছ জলাশয়ে ডুবতে দেখল আর সেখানে একটি জাতির লোকেদের সাক্ষাৎ পেল। আমি বললাম, ‘হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার কিংবা তাদের সঙ্গে (সদয়) ব্যবহারও করতে পার।’

87

সে বলল, ‘যে ব্যক্তি যুলম করবে আমি তাকে অচিরেই শাস্তি দেব, অতঃপর তাকে তার প্রতিপালকের কাছে ফিরিয়ে আনা হবে, তখন তিনি তাকে কঠিন ‘আযাব দেবেন।

88

আর যে ব্যক্তি ঈমান আনবে আর সৎকাজ করবে তার জন্য আছে উত্তম পুরস্কার আর আমি তাকে সহজ কাজের নির্দেশ দেব।

89

তারপর সে আরেক পথ ধরল।

90

চলতে চলতে সে সূর্যোদয়ের স্থানে পৌঁছল। সে সূর্যকে এমন এক জাতির উপর উদয় হতে দেখতে পেল, আমি যাদের জন্য সূর্য থেকে বাঁচার কোন আড়ালের ব্যবস্থা করিনি।

91

এই হল তাদের অবস্থা। তার সামনে যা ছিল আমি সে সম্পর্কে ছিলাম সম্পূর্ণ অবহিত।

92

এরপর সে আরেক পথ ধরল।

93

চলতে চলতে সে দু’ পাহাড়ের মাঝে এসে পৌঁছল। সেখানে সে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল। যারা কথাবার্তা কমই বুঝতে পারে।

94

তারা বলল, ‘হে যুলক্বারনায়ন! ইয়াজূজ মা’জূজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে, অতএব আমরা কি আপনাকে কর দেব যে, আপনি আমাদের ও তাদের মাঝে একটা বাঁধ নির্মাণ করে দেবেন?’

95

সে বলল, ‘আমাকে আমার প্রতিপালক যা দিয়েছেন তা-ই যথেষ্ট, কাজেই তোমরা আমাকে শক্তি-শ্রম দিয়ে সাহায্য কর, আমি তোমাদের ও তাদের মাঝে এক সুদৃঢ় প্রাচীর গড়ে দেব।

96

আমার কাছে লোহার পাত এনে দাও।’ শেষ পর্যন্ত যখন সে দু’পাহাড়ের মাঝের ফাঁকা জায়গা পুরোপুরি ভরাট করে দিল সে বলল, ‘তোমরা হাপরে দম দিতে থাক।’ শেষ পর্যন্ত যখন তা আগুনের মত লাল হয়ে গেল তখন সে বলল, ‘আনো, আমি এর উপর গলিত তামা ঢেলে দেব।’

97

এরপর তারা (অর্থাৎ ইয়াজূজ-মা‘জুজ) তা অতিক্রম করতে পারবে না, আর তা ভেদ করতেও পারবে না।

98

সে বলল, ‘এ আমার প্রতিপালকের করুণা, যখন আমার প্রতিপালকের ওয়া‘দার নির্দিষ্ট সময় আসবে, তখন তিনি তাকে ধূলিসাৎ করে দেবেন আর আমার প্রতিপালকের ওয়া‘দা সত্য।

99

আমি তাদেরকে সেদিন এমন অবস্থায় ছেড়ে দেব যে, তারা একদল আরেক দলের উপর তরঙ্গমালার মত পড়বে। আর শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে। অতঃপর আমরা সব মানুষকে একসঙ্গে একত্রিত করব।

100

আমি সেদিন জাহান্নামকে কাফিরদের জন্য সরাসরি হাযির করব।

101

আমার স্মরণ থেকে যাদের চক্ষু ছিল আবরণে ঢাকা আর তারা শুনতেও সক্ষম ছিল না।

102

যারা কুফুরী নীতি গ্রহণ করেছে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাহদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে? আমি কাফিরদের মেহমানদারির জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছি।

103

বল, ‘আমি তোমাদেরকে কি সংবাদ দেব নিজেদের ‘আমালের ক্ষেত্রে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত?’

104

তারা হল সে সব লোক দুনিয়ার জীবনে যাদের চেষ্টা সাধনা ব্যর্থ হয়ে গেছে আর তারা নিজেরা মনে করছে যে, তারা সঠিক কাজই করছে।

105

তারা হল সে সব লোক যারা তাদের প্রতিপালকের নিদর্শন ও তাঁর সাথে সাক্ষাৎকে অমান্য করে। যার ফলে তাদের যাবতীয় ‘আমাল নিস্ফল হয়ে গেছে। কিয়ামাতের দিন আমি তাদের (কাজের) জন্য কোন ওজন কায়িম করব না (অর্থাৎ তাদের এ সব ‘আমাল ওজনযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হবে না)।

106

এটাই তাদের প্রতিফল-জাহান্নাম, কারণ তারা কুফুরী করেছে আর আমার নিদর্শন ও রসূলদেরকে হাসি-তামাশার বিষয় বানিয়েছে।

107

যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের আপ্যায়নের জন্য আছে ফিরদাউসের বাগান।

108

সেখানে তারা স্থায়ী হয়ে থাকবে, সেখান থেকে বের হয়ে আর অন্যত্র যেতে চাইবে না।

109

বল, ‘সমুদ্রগুলো যদি আমার প্রতিপালকের কথা লেখার জন্য কালি হয়ে যায়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা লেখা শেষ হওয়ার আগেই সমুদ্র অবশ্যই নিঃশেষ হয়ে যাবে, আমি যদি এর সাহায্যের জন্য আরো অনুরূপ পরিমাণ সমুদ্র নিয়ে আসি তবুও।’

110

বল, ‘আমি তোমাদেরই মত একজন মানুষ, আমার নিকট ওয়াহী করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ কেবল এক ইলাহ। কাজেই যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাতের আশা করে, সে যেন সৎ ‘আমাল করে আর তার প্রতিপালকের ‘ইবাদাতে কাউকে শরীক না করে।’