শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো,
অতঃপর যারা ধমক দিয়ে তিরস্কার করে তাদের শপথ,
আর যারা (আল্লাহর) যিকর আবৃত্তিতে লিপ্ত,
তোমাদের প্রকৃত ইলাহ অবশ্য একজন।
যিনি আসমান, যমীন আর এ দু’য়ের মাঝে যা আছে এবং সকল উদয় স্থলের মালিক।
আমি নিকটবর্তী আসমানকে তারকারাজির সৌন্দর্য দ্বারা সুশোভিত করেছি,
আর (এটা করেছি) প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়ত্বান থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা হিসেবে।
যার ফলে তারা উচ্চতর জগতের কিছু শুনতে পারে না, চতুর্দিক থেকে তাদের প্রতি নিক্ষেপ করা হয় (উল্কাপিন্ড)
(তাদেরকে) তাড়ানোর জন্য। তাদের জন্য আছে বিরামহীন শাস্তি।
তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পিছু নেয়।
তাদেরকে জিজ্ঞেস কর- সৃষ্টির ক্ষেত্রে কি তারাই বেশি প্রবল, না আমি অন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছি তা (বেশি প্রবল)? আমি তো তাদেরকে সৃষ্টি করেছি (অতি নগণ্য) মাটি থেকে।
(আল্লাহর শক্তি-ক্ষমতা-মহিমা দেখে) তুমি কর বিস্ময়বোধ, আর তারা করে বিদ্রূপ।
তাদেরকে উপদেশ দেয়া হলে তারা উপদেশ নেয় না।
তারা আল্লাহর কোন নিদর্শন দেখলে ঠাট্টা করে।
আর তারা বলে- ‘এটা স্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই না।’
আমরা যখন মরব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনো কি আমাদেরকে আবার জীবিত করে উঠানো হবে?
এবং আমাদের পূর্বপুরুষদেরকেও (উঠানো হবে)?’
তাদেরকে বল, ‘হাঁ, এবং তোমরা হবে লাঞ্ছিত।’
ওটা (হবে) মাত্র একটা প্রচন্ড শব্দ, আর তখনই তারা স্বচক্ষে (সব কিছু) দেখতে পাবে।
তারা আরো বলবে- ‘‘হায় আমাদের দুর্ভাগ্য! এটাই তো কর্মফলের দিন।’
এটাই ফয়সালার দিন যাকে তোমরা মিথ্যে বলে অস্বীকার করতে।
(হুকুম দেয়া হবে) ‘একত্র কর যালিমদেরকে আর তাদের সঙ্গীদেরকে এবং তাদেরকেও, যাদের তারা ‘ইবাদাত করত
আল্লাহর (‘ইবাদাতের) পরিবর্তে, আর তাদেরকে জাহান্নামের পথ দেখাও।
অতঃপর ওদেরকে থামাও ওদেরকে তো প্রশ্ন করা হবে-
‘তোমাদের হয়েছে কী, তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করছ না কেন?’
বরং আজ তারা (বিচারের সামনে) আত্মসমপর্ণ করবে।
তারা একে অপরের দিকে মুখ করে পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
তারা (তাদের ক্ষমতাশালীদেরকে) বলবে, ‘‘তোমরা তো তোমাদের ক্ষমতা নিয়ে আমাদের কাছে আসতে।’
তারা (অর্থাৎ ক্ষমতার অধিকারীরা) উত্তর দিবে- ‘‘তোমরা তো (বিচার দিবসের প্রতি) বিশ্বাসীই ছিলে না।
আর তোমাদের উপর আমাদের কোন কর্তৃত্বও ছিল না, বরং তোমরা ছিলে সীমালঙ্ঘনকারী জাতি।
আমাদের বিপক্ষে আমাদের পালনকর্তার উক্তিই সত্য হয়েছে, আমাদেরকে অবশ্যই শাস্তির স্বাদ নিতে হবে।
আসলে আমরাই তোমাদেরকে গোমরাহ করেছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও গোমরাহ ছিলাম।’
সেদিন (দুর্বল আর সবল) সবাই ‘আযাবে শরীক হবে।
অপরাধীদের প্রতি আমি এ রকমই (আচরণ) করে থাকি।
তাদেরকে যখন ‘আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই’ বলা হত, তখন তারা অহংকার করত।
আর তারা বলত, ‘‘আমরা কি এক পাগলা কবির কথা মেনে আমাদের ইলাহগুলোকে ত্যাগ করব?
বরং সে [অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সা.)] সত্য নিয়ে এসেছে এবং (পূর্বে আগমনকারী) রসূলদেরকে সত্যায়িত করেছে।
(এখন তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা অবশ্যই মর্মান্তিক শাস্তির স্বাদ ভোগ করবে,
তোমাদেরকে কেবল তারই প্রতিফল দেয়া হবে যা তোমরা করতে।’
কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা নয় (তারা এ সব ‘আযাব থেকে রক্ষা পাবে)।
তাদের জন্য আছে নির্ধারিত রিযক-
ফলমূল; আর তারা হবে সম্মানিত।
(তারা থাকবে) নি‘য়ামাতের ভরা জান্নাতে
উচ্চাসনে মুখোমুখী হয়ে
তাদের কাছে চক্রাকারে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ প্রবাহিত ঝর্ণার সুরাপূর্ণ পাত্র।
নির্মল পানীয়, পানকারীদের জন্য সুপেয়, সুস্বাদু।
নেই তাতে দেহের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু, আর তারা তাতে মাতালও হবে না।
তাদের কাছে থাকবে সংযত নয়না, সতী সাধ্বী, ডাগর ডাগর সুন্দর চক্ষু বিশিষ্টা সুন্দরীরা (হুরগণ)।
তারা যেন সযত্নে ঢেকে রাখা ডিম।
অতঃপর তারা পরস্পরের মুখোমুখী হয়ে একে ‘অপরের খবর জিজ্ঞেস করবে।
তাদের একজন বলবে- ‘‘(দুনিয়ায়) আমার ছিল একজন সাথী।
সে বলত- ‘‘তুমি কি বিশ্বাস কর যে,
আমরা যখন মরে যাব আর মাটি ও হাড্ডিতে পরিণত হব তখনো সত্যিই কি আমাদেরকে পুরস্কার ও শাস্তি দেয়া হবে?
আল্লাহ বলবেন- ‘ তোমরা কি তাকে উঁকি দিয়ে দেখতে চাও?’
তারপর সে উঁকি দিয়ে দেখবে এবং তাকে জাহান্নামের মাঝখানে দেখতে পাবে।
সে বলবে, ‘আল্লাহর কসম! তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংসই করে দিয়েছিলে,
আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ না হলে আমিও তো (জাহান্নামের ভিতর) হাজির করা লোকেদের মধ্যে শামিল থাকতাম।
এখন আমাদের আর মৃত্যু হবে না
আমাদের প্রথম মৃত্যুর পর, আর আমাদেরকে শাস্তিও দেয়া হবে না।
এটাই তো মহাসাফল্য।
এ রকম সাফল্যের জন্যই ‘আমলকারীদের ‘আমল করা উচিত।
আপ্যায়ন হিসেবে এটা উত্তম, না, (জাহান্নামের) জাক্কুম গাছ?
এ গাছটাকে আমি যালিমদের পরীক্ষা করার জন্য (একটা উপকরণ) বানিয়েছি (কেননা, যালিমরা বলে যে, জাহান্নামের ভিতর আবার গাছ হয় কী করে?)
এটা এমন একটা গাছ যা জাহান্নামের তলদেশ থেকে বের হয়।
এর চূড়াগুলো যেন শয়ত্বানের মাথা (অর্থাৎ দেখতে খুবই খারাপ।)
জাহান্নামের অধিবাসীরা তাত্থেকে খাবে আর তা দিয়ে পেট পূর্ণ করবে।
এর উপর তাদেরকে দেয়া হবে ফুটন্ত পানির (পূঁজ সম্বলিত) মিশ্রণ।
অতঃপর তাদের প্রত্যাবর্তন হবে জ্বলন্ত আগুনের দিকে।
তারা তাদের পিতৃপুরুষদেরকে বিপথগামী পেয়েছিল।
অতঃপর তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে ছুটে চলেছিল।
এদের আগের লোকেদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
আমি তাদের মাঝে সতর্ককারী (রসূল) পাঠিয়েছিলাম।
এখন দেখ, এই সতর্ক করে দেয়া লোকেদের পরিণাম কী হয়েছিল!
কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ট বান্দাদের কথা ভিন্ন (এ সব খারাপ পরিণতি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিল।)
(ইতোপূর্বে) নূহ আমাকে ডেকেছিল, অতঃপর (দেখ) আমি কতই না উত্তম সাড়াদাতা ছিলাম!
তাকে আর তার পরিবারবর্গকে আমি মহা বিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম।
আর তার বংশধরদেরকেই আমি বংশানুক্রমে বিদ্যমান রাখলাম।
আর আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম।
বিশ্বজগতে নূহের প্রতি সালাম/শান্তি বর্ষিত হোক।
সৎকর্মশীলদেরকে আমি এভাবেই প্রতিদান দিয়ে থাকি।
সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের একজন।
অতঃপর অন্যদের আমি ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।
অবশ্যই ইবরাহীম ছিল তারই দলের লোক।
সে যখন তার প্রতিপালকের কাছে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে হাজির হল,
সে তখন তার পিতাকে ও তার জাতিকে বলল, ‘তোমরা কিসের ‘ইবাদাত কর?
তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে মিথ্যে মা’বুদ পেতে চাও?
বিশ্ব জগতের প্রতিপালক সম্পর্কে তোমরা কী ধারণা পোষণ কর?
অতঃপর তারকারাজির দিকে সে একবার তাকাল (অর্থাৎ চিন্তে ভাবনা করল)
তারপর বলল, ‘‘আমি অসুস্থ।’’
অতঃপর তারা তাকে পেছনে রেখে চলে গেল।
তারপর সে চুপে চুপে তাদের উপাস্যদের কাছে ঢুকে পড়ল আর বলল, (আপনাদের সম্মুখে রাখা এত উপাদেয় খাবার) আপনারা খাচ্ছেন না কেন?
কী হয়েছে আপনাদের, কথা বলছেন না কেন?
অতঃপর সে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সজোরে আঘাত করল।
তখন লোকেরা (ফিরে এসে) তার দিকে ছুটে আসল।
সে বলল, ‘‘তোমরা (পাথর) খোদাই করে সেগুলো নিজেরা বানাও, সেগুলোরই আবার ‘ইবাদাত কর?
আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে আর তোমরা যা তৈরি কর সেগুলোকেও।
তারা বলল, ‘তার জন্য একটা অগ্নিকুন্ড তৈরি কর, অতঃপর তাকে আগুনে নিক্ষেপ কর।’
তারা তার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি তাদেরকে এক্কেবারে হীন করে ছাড়লাম।
সে বলল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চললাম, তিনি আমাকে অবশ্যই সঠিক পথ দেখাবেন।
হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে এক সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান কর।
অতঃপর আমি তাকে এক অতি ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।
অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে চলাফিরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন ইবরাহীম (আঃ) বলল, ‘বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি, এখন বল, তোমার অভিমত কী? সে বলল, ‘হে পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন, আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন।
দু’জনেই যখন আনুগত্যে মাথা নুইয়ে দিল। আর ইবরাহীম তাকে উপুড় ক’রে শুইয়ে দিল।
তখন আমি তাকে ডাক দিলাম, ‘হে ইবরাহীম!
স্বপ্নে দেয়া আদেশ তুমি সত্যে পরিণত করেই ছাড়লে। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
অবশ্যই এটা ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।
আমি এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে পুত্রটিকে ছাড়িয়ে নিলাম।
আর আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম।
ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক!
সৎকর্মশীলদেরকে আমি এভাবেই প্রতিদান দিয়ে থাকি।
সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত।
আর তাকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের- যে ছিল সৎকর্মশীল বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত একজন নবী।
আর আমি বরকত দিলাম তাকে আর ইসহাককে; (তাদের দু’জনের) বংশধরদের কতক সৎকর্মশীল, আর কতক নিজেদের প্রতি সুস্পষ্ট যুলুমকারী।
আমি মূসা ও হারূনের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম।
আর তাদের দু’জনকে এবং তাদের জাতিকে মহা বিপদ থেকে রক্ষা করেছিলাম।
আর আমি তাদেরকে সাহায্য করেছিলাম, যার ফলে তারাই বিজয়ী হয়েছিল।
আমি উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব।
আর তাদের উভয়কে সরল সঠিক পথে পরিচালিত করেছিলাম।
আমি তাদের উভয়কে পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম।
মূসা ও হারূনের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।
এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
তারা দু’জন ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত।
ইলিয়াসও ছিল অবশ্যই রসূলদের একজন।
স্মরণ কর, যখন সে তার জাতিকে বলেছিল, ‘তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?
‘তোমরা কি বা‘য়ালকে ডাক, আর পরিত্যাগ কর সর্বোত্তম সৃষ্টিকারী
আল্লাহকে, যিনি তোমাদের প্রতিপালক আর তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষদেরও প্রতিপালক।
কিন্তু তারা তাকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করল, কাজেই তাদেরকে অবশ্যই (শাস্তির জন্য) হাজির করা হবে।
কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাহদেরকে নয়।
আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম।
ইলিয়াসের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।
এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের অন্তুর্ভুক্ত।
লূতও ছিল অবশ্যই রসূলদের একজন।
স্মরণ কর যখন আমি তাকে আর তার পরিবারের সকলকে উদ্ধার করেছিলাম
এক বৃদ্ধা ছাড়া- সে ছিল পিছ-পড়াদের একজন।
অতঃপর অন্য সব্বাইকে আমি পুরোপুরি ধ্বংস করে ছিয়েছিলাম।
তোমরা তো তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বসতিগুলোর উপর দিয়ে অবশ্যই চলাচল কর সকালে
ও সন্ধ্যায়, তোমরা কি বুঝবে না?
ইউনুসও ছিল রসূলদের একজন।
স্মরণ কর, যখন সে পালিয়ে বোঝাই নৌকায় পৌঁছেছিল।
অতঃপর (দোষী খুঁজার জন্য যে লটারী করা হল সেই) লটারীতে সে অংশ নিল আর তাতে হেরে গেল।
পরে একটা বড় মাছে তাকে গিলে ফেলল, সে কাজ করেছিল ধিক্কারযোগ্য।
সে যদি (অনুতপ্ত হয়ে) আল্লাহর তাসবীহকারী না হত,
তাহলে নিশ্চিতই তাকে পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতে হত।
অতঃপর আমি তাকে তৃণলতাহীন প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম, আর সে ছিল রুগ্ন।
অতঃপর আমি তার উপর লাউ-কুমড়া জাতীয় লতা-পাতাযুক্ত একটা গাছ বের করে দিলাম।
অতঃপর তাকে এক লাখ বা তার চেয়ে বেশি লোকের কাছে পাঠালাম।
তারা ঈমান আনল, কাজেই আমি তাদেরকে কিছুকাল পর্যন্ত জীবন উপভোগ করতে দিলাম।
এখন তুমি তাদেরকে (অর্থাৎ মক্কার কাফিরদেরকে) জিজ্ঞেস কর ‘কন্যাগুলোই কি তোমাদের প্রতিপালকের জন্য, আর তাদের নিজেদের জন্য পুত্রগণ?
নাকি আমি ফেরেশতাদেরকে মেয়ে হিসেবে সৃষ্টি করেছিলাম আর তারা (অর্থাৎ মক্কার কাফিররা সেখানে) হাজির ছিল?
দেখ, তারা অবশ্যই তাদের মন-গড়া কথা বলে যে,
আল্লাহ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তারা অবশ্যই মিথ্যেবাদী।
তিনি কি পুত্রদের চেয়ে কন্যাদেরকেই বেশি পছন্দ করেছেন?
তোমাদের কী হয়েছে, তোমরা কেমন ফয়সালা করছ?
তাহলে কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?
(তোমরা যা বলছ তার স্বপক্ষে) তোমাদের কি সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণ আছে?
তোমরা সত্যবাদী হলে নিয়ে এসো তোমাদের কিতাব।
তারা আল্লাহ ও জ্বিন জাতির মাঝে একটা বংশ সম্পর্ক সাব্যস্ত করেছে, অথচ জ্বিনেরা ভালভাবে জানে যে, তাদেরকেও শাস্তির জন্য অবশ্যই হাজির করা হবে।
তারা যা বলে আল্লাহ সে সব (দোষ-ত্রুটি) থেকে পবিত্র।
কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা এসব কথা বলে না।
তোমরা আর তোমরা যাদের ‘ইবাদাত কর তারা
আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে তোমরা কাউকেও ফিতনায় ফেলতে পারবে না।
পারবে কেবল তাকে, যে জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশকারী।
আমাদের (ফেরেশতাদের) প্রত্যেকের জন্য একটা নির্দিষ্ট স্থান আছে।
আমরা সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান (খেদমত দেয়ার জন্য)।
আমরা অবশ্যই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণাকারী।
এ লোকেরা তো বলত
আগের লোকেদের মত আমাদের কাছে যদি কোন কিতাব থাকত
তাহলে আমরা অবশ্যই আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাহ হতাম।
কিন্তু (এখন কুরআন আসার পর) তারা সেটা অমান্য ও অস্বীকার করল। তারা শীঘ্রই জানতে পারবে (এর পরিণাম)।
আমার প্রেরিত বান্দাহদের সম্পর্কে আমার এ কথা আগেই বলা আছে যে,
তাদেরকে অবশ্যই সাহায্য করা হবে।
আর আমার সৈন্যরাই বিজয়ী হবে
কাজেই কিছু সময়ের জন্য তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর।
আর তাদেরকে দেখতে থাক, তারা শীঘ্রই দেখতে পাবে (ঈমান ও কুফুরীর পরিণাম)।
তারা কি আমার শাস্তি তরান্বিত করতে চায়?
শাস্তি যখন তাদের উঠানে নেমে আসবে, তখন কতই না মন্দ হবে ঐ লোকেদের সকালটি যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল!
কাজেই কিছু সময়ের জন্য তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর।
আর দেখতে থাক, শীঘ্রই তারা দেখতে পাবে (ঈমান ও কুফুরীর পরিণাম)।
সকল সম্মান ও ক্ষমতার রব্ব, তোমার প্রতিপালক পবিত্র ও মহান সে সকল কথাবার্তা হতে যা তারা আরোপ করে।
শান্তি বর্ষিত হোক রসূলদের প্রতি।
আর যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই।